News Caff: দেবাশীষ ঘোষ-গতকাল মোহনবাগান দীর্ঘ সাতবছর পরে কলকাতা লীগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মোহনবাগানের সভাপতি স্বপনসাধন বসু (টুটু বসু) আনন্দ করতে গিয়ে বলেছেন, পরপর ৭ বার মেয়ে হওয়ার পর ছেলে হলে যেমন আনন্দ হয়, তাঁর নাকি তেমনই আনন্দ হচ্ছে। টুটু বসুর এমন পুরুষতান্ত্রিক মন্তব্যে শহরের প্রগতিশীল, মুক্তচিন্তকরা তাঁর তীব্র সমালোচনা করে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। অনেকেই টুটু বাবুকে পুরুষতান্ত্রিক ও নারী বিদ্বেষী বলে সমালোচনা করছেন এবং তাঁকে মন্তব্য ফেরত নিতে হবে এমন দাবী করছেন। যদিও টুটু বসু এখন ও মন্তব্যের জন্য দু:খপ্রকাশ করেন নি ও মন্তব্য ফেরত নেন নি।
টুটু বসু যেকথা আজ নির্বুদ্ধিতার কারনে প্রকাশ্যে বলেছেন তা আসলে অনেক তথাকথিত প্রগতিশীল মানুষেরই মনের কথা। শুধু তাঁরা শিক্ষা ও সংস্কৃতির দিক থেকে টুটু বসুদের থেকে অনেক এগিয়ে বলে এমন মুখ ফসকে বেফাঁস মন্তব্য করেন না। নারী বিরোধীতা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এমনভাবে ঢুকে রয়েছে যে সামান্য ফাঁক পেলেই তা বেরিয়ে আসে। এই কারনেই আমাদের দেশে এত আইন করার পরেও কণ্যাভ্রুণ হত্যালীলা সমানে চলছে, আজও পণের কারনে বধূহত্যা ঘটে চলেছে। ইভটিজিং মোলাস্টেশন ধর্ষন খবরের কাগজ খুললেই চোখে পড়ে। অথচ এইসব ঘৃণ্য কাজগুলির পেছনেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নীরব সমর্থন থাকে। তাই শত অপরাধে যুক্ত থাকার পরেও ছেলেরা সমাজে কাঙখিত ও মেয়েরা উপেক্ষিতই থেকে যায়। এজন্যই লোকদেখানো ক্ষমাপ্রার্থনা বা দু:খপ্রকাশে কোনো লাভ হবে না। দরকার মেয়েদের সম্পর্কে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন। নারীকে একজন পূর্নাঙ্গ মানুষ হিসাবে ভাবতে শেখা। যতদিন তা না হচ্ছে, ততদিন মেয়েদের আত্মপ্রতিষ্ঠার লড়াই থামবে না। তাই ভবিষ্যতের নাগরিকদের সমানাধিকারের শিক্ষা দেওয়া হোক ছোট থেকে, যাতে তাদের মধ্যে এমন কোনো অর্বাচীন টুটু বসুর জন্ম না হয়।