News Caff: ২০১৯ সালে ভারতের মতই বাংলাদেশেও সাধারন নির্বাচন হওয়ার কথা। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ, তাই এই দেশ ভবিষ্যতে কোন পথে চলবে তা নির্ধারন করার অধিকার শুধু বাংলাদেশের নাগরিকদের ই আছে। কোনো তৃতীয় পক্ষ বা বিদেশী রাষ্ট্রের এখানে নাক গলাবার অধিকার নেই। বাস্তবে অবশ্য পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে কোন রাষ্ট্রই বা ন্যায় নৈতিকতা মেনে চলেছে? ফলে বাংলাদেশের নির্বাচনেও গণতান্ত্রিকতা ও মানুষের ভোটাধিকারের আড়ালে আবডালে অন্য খেলা শুরু হয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি বিদেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচনে, পছন্দের দলের স্বপক্ষে সরকার গঠনের খেলায় বেনামে যোগ দিয়েছে। কারন পছন্দের দল ক্ষমতা দখল করলে, সেই বিদেশী রাষ্ট্রগুলি বাংলাদেশের থেকে অনেক সুযোগ সুবিধা আদায় করতে পারবে। ফলে তারা চায়, যেন তেন প্রকারেন পছন্দের দল বা দলীয় জোট বাংলাদেশের নির্বাচনে যেন জয়ী হয়।
বিএনপি-জামাত জোটকে জেতানোর জন্য পাকিস্তান-চীন মরিয়া। কারন বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশে ভারত বিরোধী ঘাঁটি তৈরী করা সহজ হবে। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গীদের সেফ হেভেন হিসাবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করা যাবে। উগ্র ইসলামী মৌলবাদের পালে বাতাস দিয়ে বাংলাদেশে ধর্মান্ধতা ছড়িয়ে দিয়ে তাকে পাকিস্তানের ঘণিষ্ঠ বন্ধুতে পরিনত করা যাবে। এতে চীনের প্রত্যক্ষ লাভ না থাকলেও পরোক্ষ লাভ আছে। কারন যতই প্রতিবেশীর থেকে ভারত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের প্রভাব তত কমবে। তাই চীনও বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ISI তাই বাংলাদেশে সক্রিয় আছে নির্বাচনে তার সীমিত সাধ্যে যতটা প্রভাব বিস্তার করা যায়, তার পূর্ণ সদব্যবহার করতে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে সবচেয়ে প্রভাবশালী বিদেশী রাষ্ট্র ভারত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে। আওয়ামী লীগ ভারতের জন্য প্রচুর করেছে, আবার ভারতও লীগকে তার পূর্ণ প্রতিদান দিয়েছে। ভারতের গুপ্তচর সংস্থা RAW বাংলাদেশের জন্য আলাদা সেল খোলে ১৯৯১ সালে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পি, ভি, নরসিমা রাওয়ের নির্দেশে। তার আগে “র” এর দক্ষিণ এশিয়া সেল বাংলাদেশ সংক্রান্ত কাজকর্ম দেখাশুনা করতো। পৃথক সেল খোলার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল, বাংলাদেশে বন্ধু সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়ে পাকিস্তানী নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দেওয়া। আওয়ামী লীগ ভালোমত জানে বাংলাদেশের নির্বাচনে জয়লাভের পিছনে ভারতের অবদান কতখানি। আর ভারতকে অগ্রাহ্য করে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের পক্ষে দীর্ঘকালীন ভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই নির্বাচন শুরু হওয়ার আগেই লীগ নেতারা ঘন ঘন দিল্লীতে ছুটে আসছেন যাতে আগের মতই ভারতের নিরঙ্কুশ সমর্থন তাদের পক্ষে থাকে তা নিশ্চিত করার আশায়।
আগামী সংখ্যায় সমাপ্য