নিজেকে সুস্থ ও ফিট রাখাটাই সব চাইতে বড়ো চ্যালেঞ্জ।শরীরের ওজন কমাতে হোক কিংবা স্বাস্থ্য সচেতনার জন্য, নর্মাল চা, মশালা চা, আদা চা ছেড়ে সকলেরই মন এখন গ্রিন টি-তে। ওজন কমানো থেকে শুরু করে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হজমশক্তির উন্নতি করে এই গ্রিন টি। গ্রিন টি পান কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। এর উপকারের তালিকা খুবই দীর্ঘ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে দিনে এক কাপ থেকে দু’ কাপ গ্রিন টি পান করা স্বাস্থ্যকর। গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। নিয়মিত খেতে পারলে ত্বক, চুল সব ভালো থাকে।
গ্রিন টি খেলে কী কী উপকার হয়
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গ্রিন টি খুবই কার্যকর। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গ্রিন টি শরীরে রক্তচলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। শুধু তা-ই নয়, গ্রিন টি রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। পাশাপাশি গ্রিন টি শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
ওজন কমায়
এক কাপ কফির থেকে এক কাপ গ্রিন টি খাওয়া বেশি স্বাস্থ্যকর। কফির তুলনায় গ্রিন টি-তে ক্যাফেইন কম থাকে, তবু তা শরীরের সতেজতায় যথেষ্ট। গ্রিন-টি’র পলিফেনল শরীরের ফ্যাট অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করে খাবার থেকে ক্যালোরি তৈরির প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। ফলে দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এটি এক দিনে ৭০ ক্যালোরি পর্যন্ত ফ্যাট বার্ন করতে পারে। এর মধ্যে থাকা বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান এই কাজে মুখ্য ভূমিকা রাখে। গ্রিন টি এক ধরনের হরমোনের পরিমাণ শরীরে বাড়িয়ে তোলে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। যাঁরা গ্রিন টি পান করেন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাঁদের দ্রুত চর্বি ঝরে।
হজমশক্তিকে স্থিতিশীল করে
অনেকের দাবি, নিয়মিত গ্রিন টি খেলে হজমশক্তি বা মেটাবলিজম বাড়তে থাকে। এর ফলে ওজন কমবে। মেদ কমবে। কিন্তু কথাটা সত্যি না। যাঁদের ওজন এক জায়গায় আটকে আছে, তাঁদের হজমক্ষমতারও কোনও বদল হচ্ছে না। এই সব ব্যক্তি ক্ষেত্রে গ্রিনটি খেলে কোনও লাভ হয় না। যাঁদের ওজন কমছে-বাড়ছে, হজমশক্তির নিরন্তর বদল হচ্ছে, গ্রিন টি পান করলে তাঁদের হজমশক্তি এক জায়গায় স্থির হয়।
সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে তা প্রত্যক্ষ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে গ্রিন টি। ফলে দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না।
কোলেস্টেরল কমায়
গ্রিন টি শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় উপকারী কোলেস্টেরলের পরিমাণও বাড়ায়।
দাঁতের সুস্থতা
গ্রিন টি’র ‘ক্যাটেকাইন’ নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মুখের ভিতরের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ধ্বংস করে। ফলে গলার ইনফেকশন-সহ দাঁতের বিভিন্ন সমস্যাও কমিয়ে আনে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে যায়।
হতাশা কমায়
হতাশা থেকে মুক্তি প্রাকৃতিক ভাবেই ‘থিয়ানিন’ নামের অ্যামাইনো অ্যাসিড চা পাতায় পাওয়া যায়। এই উপাদান দুশ্চিন্তা ও হতাশা কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে অবসাদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ত্বকের যত্ন
মুখে বয়সের ছাপ ও বলিরেখা দূর করতে গ্রিন টি’র জুড়ি নেই। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামাটরি উপাদান ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না। তা ছাড়া এটি ত্বকের রোদে পোড়া ভাব কমাতে ও ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সাহায্য করে।