NewsCaff : প্রবেশিকা ফিরল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুধু তাই নয়, এই প্রবেশিকার সমস্ত দায়িত্বে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষকরা। গত ৪ জুলাই কর্মসমিতির বৈঠকে এই দুই সিদ্ধান্ত থেকেই সরে এসেছিল বিশ্ববিদ্যালয়। তারপর প্রবেশিকা ফেরাতে প্রাণপাত আন্দোলন শুরু করেন ছাত্র-ছাত্রীরা।
কিন্তু বড় খিঁচ থেকে যাচ্ছে এই সিদ্ধান্তেও। কেননা উপাচার্য সুরঞ্জন দাস এবং সহ-উপাচার্য প্রদীপকুমার ঘোষ জানিয়ে দিয়েছেন, ভর্তি-পরীক্ষা ফেরানোর সিদ্ধান্তের সঙ্গে তাঁরা সহমত নন। শুধু জানিয়ে দেওয়াই নয়, সরে দাঁড়াতে চেয়েছেন দু’জনেই।
রাতে উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘আমি এবং সহ-উপাচার্য কর্মসমিতির প্রবেশিকা ফেরানোর সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত পোষণ করছি না। কারণ, রাজ্যপালের চিঠির প্রেক্ষিতে আইনজীবী যা বলেছেন, তার বাইরে আমরা যেতে পারব না। আমরা রাজ্যপালকে জানাব, এখানে সুস্থ প্রশাসন চালানো যায় না। প্রতিবাদের অর্থ কি সুস্থ সংস্কৃতির চিহ্ন থাকবে না? ‘উপাচার্যের চামড়া, তুলে নেব আমরা’— এমন ভাষার প্রয়োগ চলবে? এই অবস্থায় আমরা দু’জনেই অব্যাহতি চাইব।’’
কর্মসমিতির সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেন পড়ুয়ারা। অনশন তুলে নেওয়া হয় রাত সওয়া ১০টায়। কিন্তু পড়ুয়ারা জানান, আন্দোলন চলবে। কেননা স্বাধিকার যে খর্ব হচ্ছে না, সেই বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত হতে পারেননি। অনশন ওঠার মিনিট দশেক পরে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ৪ জুলাই কর্মসমিতির ন’জন সদস্য প্রবেশিকা পরীক্ষার বিরুদ্ধে মত দিয়েছিলেন। এ দিনের বৈঠকে ১২ জন প্রবেশিকার পক্ষে মত দিয়েছেন।
বৈঠকের ফলাফল: ১) কলা বিভাগের ছ’টি বিষয়ের ভর্তির ক্ষেত্রে প্রবেশিকা পরীক্ষা থেকে নেওয়া হবে মোট ৫০% নম্বর। উচ্চ মাধ্যমিক অথবা সমতুল পরীক্ষায় পড়ুয়ার প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৫০ শতাংশ যোগ হবে। ২) ভর্তির প্রক্রিয়া ঠিক করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং কলা বিভাগের ডিন। ৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি কর্মসমিতি সম্পূর্ণ আস্থা দেখিয়েছে এবং গোটা ভর্তি প্রক্রিয়ায় তাঁদের সাহায্য চেয়েছে।
উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু এবং সহ-উপাচার্য প্রদীপবাবু এই সিদ্ধান্তের অংশীদার হতে চাননি। সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধি মনোজিৎ মণ্ডল। রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য এ দিনের আলোচনায় যোগই দিতে চাননি। এই অবস্থায় উপাচার্য অব্যাহতির কথা বলায় ‘হোক কলরব’ মনে পড়ে যাচ্ছে অনেকেরই। সেই আন্দোলনের জেরে পদত্যাগ করেন যাদবপুরের তখনকার উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী। এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সে-কথা ঘোষণা করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।