মহরম মানে অস্ত্র মিছিল নয়

News Caff: গাজী রহমান এর কলমে – এই অস্ত্র মিছিল ইসলামের এক বিন্দু পরিমান উপকার হবে না,কিন্তু উপকারে আসবে কিছু অসাধু রাজনৈতিক ধর্মব্যাবসায়ি থেকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির।না জেনে না বুঝে অস্ত্র প্রদর্শন করে, সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে ইস্যু তুলে দিবেন না।
#সাম্প্রদায়িক_সম্প্রিতী বজায় রাখুন।
মহরম মাসের আশুরার দিন কিছু মানুষ নিজের সখের জন্য ইসলাম সম্পর্কে কিছুই না জেনে অস্ত্র নিয়ে খেলা করে, তাজিয়া বানাই, প্রতি বছর নতুন নতুন রূপে, নতুন আঙ্গিকে, নানান বৈচিত্রে গান গায় জারি লোক-গাথা, সঙ্গে গান বাজনা প্রচলিত রেখেছেন, এই সকল ব্যাক্তি না জেনে না বুঝে সমগ্র ইসলাম কে বদনাম করেছে, আশ্চর্য হলেও সত্যি অনেক সময় এই দিনে মদ খেয়ে মাতলাম করতেও দেখেছি সচক্ষে এর চেয়ে দুঃখ ও কস্টের কি হতে পারে।
ইসলামের সাথে এই অস্ত্র মিছিলের কোনরূপ সম্পর্ক নাই।যদি থাকতো তাহলে প্রথম সারিতে ইসলাম জানা লোকের সমাগম হতো।
১০ই মহররমের দিন যা করে তা প্রকৃতপক্ষেই বাড়াবাড়ি । মাত্র একদিনের জন্য শরীরের রক্ত বের করে বাকী দিনগুলোতে আশুরার মহত্ত্বকে ভূলে থাকা ইসলামের আদর্শ হতে পারে না । ইসলামের জন্য এভাবে রক্ত দিতে হবে এটা ইসলাম কামনা তো দূরের কথা গ্রহনই করে না ।
আগে জানুন মহরম মাসের আশুরার দিন টি কি?
ইসলামিক বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস। চারটি পবিত্রতম মাসের মধ্যে এটি একটি। মুহররম শব্দটি আরবী যার অর্থ পবিত্র, সম্মানিত। প্রাচীনকাল থেকে মুহররম মাস পবিত্র হিসাবে গন্য। মহররমের ১০ তারিখ বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন দিন, যাকে আশুরা বলা হয়ে থাকে। মহররম মাসের পরবর্তি মাসের নাম সফর।
মুহররম মাসের দশম দিন ইসলামে বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন একটি দিন, কারণ এই দিনে ইসলাম ধর্মমতে অনেক ঘটনার অবতারণা হয়েছে।
#এইআশুরারদিনের_গুরুত্ব
বিভিন্ন ঘটনাবলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো

১)সমগ্র জগৎ সৃষ্টির দিন।

২. এদিন কেয়ামত অনুষ্টিত হবে।

৩)এই দিনে প্রথম মানব আদি পিতা হযরত আদম [আ.]-কে সৃষ্টি করেন ঈশ্বর (আল্লাহ)।

৪)হযরত আদম [আ.]-কে এদিনেই স্বর্গ বা বেহেশতে স্থান দেয়া হয়, এবং পরবর্তীতে এই দিনেই পৃথিবীতে পাঠিয়ে আল্লাহ তাঁকে প্রতিনিধি মনোনীত করেছেন।

৫)হযরত নূহ [আ.]-এর সময়কালে এই দিনে মহাপ্লাবন হয়।

৬)হযরত ইব্রাহীম [আ.] জন্ম নেন এই দিনে, এবং হযরত মুসা আঃ ও তার বাহিনী ফেরাউনের কবল থেকে উদ্ধার পানও এই দিনে

৭) হযরত মুসা [আ.] সমসাময়িক ফেরাউনকে আল্লাহ এই দিনে নীল নদের পানিতে ডুবিয়ে মারেন।

৮)হযরত ইউনুছ [আ.] মাছের পেট থেকে মুক্তি পান এই দিনে।

৯)হযরত আইয়ূব [আ.] রোগ মুক্তি পান এই দিনে।
হযরত ঈসা [আ.] (খ্রিস্টধর্মমতে যিশু) এই দিনে জন্ম নেন এবং পরবর্তিতে তাঁকে সশরীরে ঊর্ধ্বাকাশে উঠিয়ে নেয়া হয় এই দিনে।

১০)হযরত মুহাম্মদ-এর [স.] দৌহিত্র ইমাম হুসাইন [রা.] এই দিন কারবালার ময়দানে ইয়েজিদের হাতে মৃত্যুবরণ করেন।

১১)হযরত ইয়াকুব (আঃ) তার হারানো পুত্র হযরত ইউসুফ (আঃ) কে চল্লিশ বছর পর ফিরে পেয়েছিলেন ।

মহররমের ১০ তারিখে রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। একটি হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয়, রমজান মাসের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা উম্মতে মুহাম্মদীর ওপর ফরজ ছিল। পরবর্তী সময়ে অবশ্যই ওই বিধান রহিত হয়ে যায় এবং তা নফলে পরিণত হয়। হাদিস শরিফে হজরত জাবের (রা.) সূত্রে বর্ণিত আছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের আশুরার রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং এর প্রতি উৎসাহিত করতেন। এ বিষয়ে নিয়মিত তিনি আমাদের খবরাখবর নিতেন। যখন রমজানের রোজা ফরজ করা হলো, তখন আশুরার রোজার ব্যাপারে তিনি আমাদের নির্দেশও দিতেন না এবং নিষেধও করতেন না। আর এ বিষয়ে তিনি আমাদের খবরাখবরও নিতেন না। -সহিহ মুসলিম শরিফ: ১১২৮।
এই দিনে ধর্মপ্রাণ মুসলিমগণ নামাজ পাঠ, কোরান পাঠ, দরিদ্র অসহায়দের দানের মধ্যে দিয়ে নীরব শ্রদ্ধা পালন করে থাকেন।
অস্ত্র মিছিল সহ, নানান বেদাতি কাজ থেকে বিরত থাকবো।
নিজে সতর্ক হোন ও ওপর কে সতর্ক করবো ইনশাআল্লাহ।

Flamingo Media Share